ইউসুফ আলী খান:
আজ ঐতিহাসিক ২৩ জুন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সব আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া দেশের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলটি এবার পা রাখছে ৭৪ বছরে।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটির যাত্রা শুরু হয়। পরে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটাতে এর নাম ‘আওয়ামী লীগ’ করা হয়।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। আর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ শব্দ দুটি বাদ পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে। স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে প্রবাসী সরকারের সব কাগজপত্রে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নাম ব্যবহার শুরু হয়।
প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সারাদেশে নানামুখি কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ২৩ জুন বেলা ১২ টার সময় ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় গ্রামীণ কনভেনশন সেন্টারে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বাংলাদেশ উন্নয়নের রুপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের দল। জনগণই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি।আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ ভূখণ্ডে প্রতিটি প্রাপ্তি ও অর্জন সবই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই হয়েছে। মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাঙালির অর্জন এবং বাংলাদেশের সব উন্নয়নের মূলেই রয়েছে আওয়ামী লীগ।
উল্লেখ যে, ১৯৪৯ সালে ২৩ জুন ঢাকার স্বামীবাগের কেএস দাস লেনের রোজ গার্ডেনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলন করে। কর্মী সম্মেলনে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম কমিটি।
আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী সাভার আশুলিয়ার মাটি ও মানুষের নেতা মানবতার ফেরিওয়ালা ঢাকা ১৯ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ এনামুর রহমান এনাম (এমপি)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের দুর সময়ের কান্ডারী সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মঞ্জুরুল আলম রাজীব।
আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাভার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন খান, ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সৈয়দ আহমদ ভুঁইয়া, শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আজহারুল ইসলাম সুরুজ, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাবুদ্দিন মাদবর, পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ পারভেজ দেওয়ান, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার, যুগ্ম আহ্বায়ক ও ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ মইনুল ইসলাম ভুঁইয়াসহ আশুলিয়া থানার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীগণ।
এসময় দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনাম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে হয়তো আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। তিনি ৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলনের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং তার নেতৃত্বের কারণে পুর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীন বাংলা হিসাবে ৫৫ হাজার বর্গমাইলের একটি ভূখন্ড বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বাংলাদেশকে একটি সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কিছু স্বাধীনতা বিরোধী কুচক্রী মহল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার আগেই ৭৫ এর ১৫ ই আগষ্ট স্ব পরিবারে নির্মম ভাবে হত্যা করে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর এই অসম্পূর্ণ কাজকে বাস্তবায় করে যাচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ দেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নতি লাভ করেছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, দেশ আজ এক সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে। স্মরণ কালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় আজ দেশের মানুষ এক দুর্যোগময় সময় কাটাচ্ছে। সরকার বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে থেকে তাদেরকে সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বন্যা দুর্গতদের পাশে থেকে তাদের সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য নেতা কর্মীদের আহ্বান জানান তিনি।
পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে এবং বন্যা দুর্গত মানুষের দুঃখ দুর্দশা দুর করার জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।