নিউজ ডেস্ক; খোলা নিউজ বিডি-২৪. এস আর টুটুল এম এল।
রাজশাহীর তানোরে সাংবাদিক আবুল কাশেম বাবুর মাথায় মারাত্মক আঘাতের ক্ষত না শোকাতেই প্রতিপক্ষ সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য যুব-মহিলা লীগের সভাপতি বেলি খাতুন ৮০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির মামলা করেছেন।
জানা গেছে গত ৮ই মে আদালতের নির্দেশে মামলাটি করেছে থানা পুলিশ। মামলায় কাশেমের ১৪ বছর বয়সের ছেলেসহ গ্রামে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীর স্বামী জারদিসকেও প্রতিহিংসা মুলুক আসামি করা হয়েছে। উপজেলার কামারগাঁ ইউপির শ্রীখন্ডা গ্রামে ঘটেছে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তথ্য সূত্রে জানা যায় গত পবিত্র মাহে রমজান মাসের প্রথম রোজার ইফতার কিনতে সাংবাদিক আবুল কাশেম ও তার ছেলে আসেন কামারগাঁ শ্রীখন্ডা গ্রামের মোড়ে। তিনি আসা মাত্রই আলমগীর ও তার স্ত্রী ফেসবুকে কেন লিখা হয়েছে বলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করেন। তৎক্ষনাৎ সাংবাদিক আবুল কাশেম বাবুকে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, ঐ আঘাতের মাত্রা এতই ভয়ানক ছিল যে তার মাথায় বিশটি সেলাই দেওয়া হয়। এঘটনায় কাশেম বাদি হয়ে আলমগীর ও তার স্ত্রী কে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। আবার সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য বেলি খাতুন পাল্টা চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন থানায়। এরই প্রেক্ষিতে কাশেমের নামে ও তার ১৪ বছর বয়সের ছেলেসহ জারদিসের নামে ৮০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলাটি রেকর্ড ভুক্ত হয়েছে।
অথচ কাশেম হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনার মামলায় তারা জামিন পেয়েছেন। কাশেমর মাথার আঘাত সেরে উঠার আগেই সাংবাদিক আবুল কাশেম তার ছেলে ও জারদিসের নামে ৮০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির মিথ্যে অভিযোগে অদৃশ্য ক্ষমতায় মামলাটি রেকর্ড ভুক্ত হয়েছে। অথচ সাংবাদিক কাশেম আজও পুরো পুরি সুস্থ হয়ে উঠে নাই।
ঐ ঘটনায় কাশেম হাসপাতালে চিকিৎসাধিন থাকা অবস্থায় তার ঘরে পুত্র সন্তান এসেছে। নবজাতক ছেলে ও প্রসূতি স্ত্রীর দেখাশোনা করতে পারছেনা সাংবাদিক আবুল কাশেম। তার ১৪ বছরের ছেলেকেও করা হয়েছে আসামি। মাথার মারাত্মক আঘাত ও ছেলে কে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কাশেম। চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন তার পুরো পরিবার।
সাংবাদিক কাশেম বলেন, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত মারাত্মক ক্ষত হওয়ার কারনে বিশটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। রোজা থাকা অবস্থায় আমাকে এভাবে রক্তাক্ত করা হল। আমি কোন অন্যায় না করে শুধু প্রতিহিংসার শিকার। তারা জামিন পেয়ে আমাকে ও আমার ছেলেসহ, জারদিসকে আসামি করে ৮০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির মামলা করল। আর এসআই নিজাম আমাকে মোবাইলে গ্রেফতারের হুমকি দিচ্ছে। তারা তদন্ত না করেও প্রলোভনে মামলা করেছেন। আমি মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। মাথা প্রচুর যন্ত্রণা করে। আমার পরিবারের করুন অবস্থা। এসব না করে আমাকে ও ছেলেকে ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলা হোক। তাও পরিবারের অন্য সদস্যরা শান্তনা পাবে দুনিয়াতে তো নেই। আমাকেই মেরে আমার নামেই মামলা?
আলমগীর মোড়ে ঔষধের দোকান করে তার দোকানে ৮০ হাজার টাকার ঔষধ পর্যন্ত নাই। আর এসআই নিজাম তার প্রলোভনে এসব করছেন।
মামলার আরেক আসামি জারদিস জানান, ঘটনার দিন আমি ছিলাম না। আমার জন্ম এখানে। চৌদ্দ পুরুষের বাস এই গ্রামে, আর আমার নামে চাঁদাবাজি মামলা দিচ্ছে। শুধু মাত্র আমার স্ত্রী ভোট করার জন্য আমি মিথ্যাে মামলার আসামি। আর যাই হোক আমাদের গ্রামে এসব ঘটনা নেই। কিন্তু সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তাদের সমতুল্য ছেলে আছে আমার, আর আমিই মামলার আসামি? ক্ষমতার অপব্যবহারের কারনে গ্রামের মানুষও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ছেন। তাদের নাকি শহরে অনেক বড় মাপের নেতা ও মাস্তান আছে। অনুরোধ করব এধরণের হয়রানি মুলুক কাজ থেকে বিরত থাকতে।
আলমগীর জানান, ঘটনার দিন টাকা না দেওয়ার কারনেই তো হামলার ঘটনা। ফেসবুকে লিখা নিয়ে হামলা করা হয়েছে প্রশ্ন করা হলে দম্ভক্তি প্রকাশ করে আলমগীর বলেন, মামলা হয়েছে আইনের মাধ্যমে সব হবে।
সাংবাদিক আবুল কাশেম জাতীয় দৈনিক পুনরুত্থান পত্রিকা রাজশাহীতে গঠন মুলক নিউজ করেন। এছাড়া নূরনগর টিভি রাজশাহী প্রতিনিধি, সূর্যের আলো নামের অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক, অনলাইন নিউজ পোর্টালের ডিএসএ বাংলা টিভির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। সামাজিক সংগঠন বঙ্গবন্ধু জাতীয় মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ও তানোর মডেল প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি হিসেবে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলিফ হোসেন জানান, মামলাটির সঠিক তদন্ত না করে অদৃশ্য শক্তির কারনে আহত সাংবাদিক কাশেম ও তার ছেলের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এধরণের হয়রানি মুলুক কাজ করা থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তিনি। সেই সাথে পুনরায় তদন্তের দাবি করেন। আর মামলা করে সাংবাদিকদের কলম থামানো যাবে না। এধরণের হয়রানি মুলুক মামলা প্রত্যাহার না হলে সাংবাদিক সমাজ বসে থাকবে না। অচিরেই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও জানান এই সিনিয়র সাংবাদিক।