কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি এস এম নুরুন্নবী
ঈদের ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি যেন থামছেই না। বাস, ট্রেন থেকে শুরু করে সে ভোগান্তি গিয়ে ঠেকছে নৌকাতেও। দুদিন ধরে ঈদের ঘরমুখো যাত্রীদের এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী বন্দরের নৌ-ঘাটে।
রৌমারী থেকে চিলমারী এবং চিলমারী থেকে রৌমারী-রাজিবপুর নৌ-রুটে অস্বাভাবিক ভাবে নৌকার ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। যাত্রীদের হয়রানিও করা হচ্ছে। দুদিন ধরে নৌ-ঘাট গুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র।
ঈদকে ঘিরে যাত্রী প্রতি ৮০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা, মোটরসাইকেলে ৮০ টাকার ভাড়া ১৫০ টাকা এবং যাত্রীর মালামাল ওঠানামায় আলাদা ৬০-৭০ করে বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের দেওয়া হচ্ছে না টাকা আদায়ের কোনো রশিদ কিংবা টিকিট। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে দলবেঁধে নৌকাতেও উঠতে দিচ্ছেন না নৌকার মালিকরা। নদী পারাপার না হবার আশঙ্কায় অধিকাংশ যাত্রী নীরবে সহ্য করছেন ঘাট ইজারদার ও নৌকার মালিকদের এমন আচরণ। এছাড়াও নৌকা ঘাটে যাত্রীদের সুবিধার্থে নেই টয়লেট ও টিউবওয়েলও।
ঢাকা থেকে রৌমারী হয়ে কুড়িগ্রামে নৌকায় পারাপার হওয়া যাত্রী সাদ্দাম হোসেন বলেন, “৮০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা নিচ্ছে। ৩০-৪০ টাকা বেশি নিক সেটা মানায়। কিন্তু এতো বেশি ভাড়া আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য।”
আরেক যাত্রী রবিউল ইসলাম বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যার সময় নৌকায় উঠছি শনিবার ভোরে নামায় দিছে। অতিরিক্ত ভাড়ার প্রতিবাদ করলে নৌকা থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।”
চিলমারী থেকে রাজিবপুর যাওয়া নৌকার যাত্রী আরিফুল ইসলাম বলেন, “বাইকেও অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে, জনপ্রতিও ভাড়া নিচ্ছে বেশি। কোনো টিকিট দিচ্ছে না। কিছু বললেই নৌকায় না ওঠানোর হুমকি দেন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নৌকার মাঝি বলেন, “ব্রহ্মপুত্র এই নদ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হয়। ঈদ সামনে আরও বেশি লোকজন পারাপার হচ্ছে। ইজারাদাররা এই সুযোগে বাড়তি ভাড়া আদায় করে আর নৌকার মালিকদের জনপ্রতি ২৫০০ করে অতিরিক্ত টাকার ভাগ দেয়।”
এ বিষয়ে রৌমারী ঘাটের ইজারাদার মো. মাহতাব হোসেন বলেন, “অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি ঠিক নয়। আমরা বলেছি কেউ এমনটা করবে না। এরপরও বিষয়টি যেহেতু জানলাম, আমি এখনি বিষয়টা দেখছি।”
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় আর যাত্রীদের হয়রানীর বিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার ব্যাপারে আমরা সর্তক করেছি। বিষয়টি খোঁজ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। আমাদের এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। আমরা দ্রুত খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি