………………………………………………………….
সোহানুর রহমান
আমি কখনোই নিজেকে চেয়ারম্যান মনে করিনাই। আপনারা আমাকে ৫ বছরের জন্য আপনাদের চাকর যাকে বলে বছর মারি কামলা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন মাত্র। আমি আমার দায়িত্ব সততার সাথে পালন করেছি। আপনারা আমার মনিব,আর আমি আপনাদের সেবক, সেই হিসেবেই পথ চলেছি। আপনাদের চোখের দিকে তাকিয়ে কখনো কথা বলিনি। সারাজীবনেও সেই সাহস আমার হবে না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি গত ৫ বছরে কখনো কারো সাথে বেয়াদবি করিনাই। আমি সব সময় একটা জিনিস মাথায় রেখেছি মেরুরচর ইউনিয়নের সকল জনগন আমার মাথার মুকুট। আমি তাদের সেবক মাত্র। শনিবার সকালে মাদারের ব্রীজের নিচে আয়োজিত উম্মুক্ত নির্বাচনী সভায় এসব কথা বলেন শেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ও মেরুরচর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জেহাদ।
সভায় ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জেহাদ আরো বলেন,আপনারা আমাকে ভালোবেসে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। জানিনা কতটুকু করতে পেরেছি। এই ৫ বছরে যতটুকু ভালো কাজ করেছি তার সবকিছুর কৃতিত্ব আপনাদের। আর যতটুকু করতে পারিনি তার সমস্ত ব্যার্থতা আমার। আমি আপনাদের সন্তান। আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার শরীরে প্রবাহিত হচ্ছে বীরের রক্ত। সেই রক্তের কসম আমি অন্যায়ের সাথে কোনদিন আপোষ করিনাই। কোন দুর্নীতি করিনাই। টিআর,কাবিখা,ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতা,শিশু ভাতা সহ সরকারি যত অনুদান আছে সবকিছুই স্বচ্ছতার সহিত বিতরন করেছি। কেউ যদি বলতে পারে আমি গত ৫ বছরে সরকারি কোন অনুদান বিতরনে কারো কাছে একটি টাকাও নিয়েছি তাহলে আর চেয়ারম্যানের নাম মুখে নিবনা। চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আমি কোন অনিয়ম দুর্নীতি করিনাই। বিচার শালিসের নামে কারো পক্ষে বিপক্ষে কাজ করিনাই। আমার কাছে যা ন্যায় সঙ্গত মনে হয়েছে তাই করেছি। চলতে পথে হয়তো সবার মন আমি জয় করতে পারিনি, তবে কারো মনে কখনো কষ্ট দেইনি। নিজে শত কষ্টের মাঝে থেকেও সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলেছি। আপনারা চারিদিকে খবর নিয়ে দেখবেন আমার হয়তো কোন সুনাম নেই তবে বদনামও কিন্তু নেই। আপনাদের সুনাম ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কাজ আমি করিনাই। ছোট্ট বেলা থেকেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাজপথের অগ্রভাগে থেকেছি সব সময়। গুলির মুখেও পিছপা হয়নি কখনো। ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের দায়িত্ব পালন করেছি। মানুষের বিপদে পাশে থেকেছি সব সময়। তাই আগামী ইউপি নির্বাচনে আবারো দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। মেরুরচর ইউপির মনোনয়ন নিয়ে অনেকেই মিথ্যা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। মনোনয়ন নিয়ে কারো কোন কথায় আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নিতে কখনো ভূল করেন না। তিনি সব সময় সঠিক সিদ্ধান্তই নেন। মেরুরচর ইউনিয়নেও সঠিক মানুষের হাতেই নৌকা তুলে দিবেন তিনি। যে নৌকা পানিতে ভাসিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিবেন আপনারা। আমি শুধু আপনাদের কাছে দোয়া চাই। যাতে করে আমি সারাজীবন আপনাদের পাশে থাকতে পারি,আপনাদের সেবা করতে পারি।
জেহাদ আরো বলেন,জামালপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ মহোদয় একজন পরিচ্ছন রাজনীতিবিদ ও সততার মূর্তিমান প্রতীক। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর যাবত তিনি দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ বাসীর সেবা করে আসছেন। বয়োবৃদ্ধ এই মানুষটি সব সময় এলাকার উন্নয়নের কথা ভাবেন। এলাকার মানুষের জন্য চিন্তা করেন। তিনিও সব সময় সটিক সিদ্ধান্তই গ্রহন করেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী কেউ কেউ এই মহত মানুষটিকে নিয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। দয়াকরে আপনারা এই মহান মানুষটিকে নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবেন না। কারন দুই উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষই তার। তিনি হচ্ছেন দুই উপজেলার মানুষের অভিভাবক। আপনারা সকলে সাবেক সফল মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ এমপি মহোদয়ের জন্য প্রাণখুলে দোয়া করবেন। মহান সৃষ্টিকর্তা যেনো তাকে দীর্ঘায়ু দান করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেরুরচর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মওলা। মেরুরচর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সভায় অতিথি হিসাবে অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন মেরুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ আলী, বুলবুল বিএসসি,আবুল হোসেন মাষ্টার, সমাজ সেবক হেলাল উদ্দিন,জাকির হোসেন, উপজেলা তাঁতী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আমির ফয়সাল প্রমূখ।
উল্লেখ্য, জাহিদুল ইসলাম জেহাদ ১৯৭৬ সালে মেরুরচর ইউনিয়নের মাদারেরচর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা-বীর মুক্তিযোদ্ধা (যুদ্ধ কালীন কোম্পানি কমান্ডার) মেরুরচর ইউনিয়নের পদকপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ গোলাম মাওলা ও মাতা জাহানারা বেগমের চার সন্তানের সবার বড় তিনি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে দেশপ্রেম আর মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয়ে সপ্তম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় তার। ১৯৮৯ সালে শেরপুর উচ্চবিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে তিনি শেরপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন। কলেজ জীবনে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য পদ লাভ করেন। তৎকালীন এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদের সদস্য হিসাবে রাজপথে সাহসী ভূমিকা পালন করেন জেহাদ। ১৯৯৩ সালে শেরপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালে নির্বাচিত একই সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শেরপুর জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ২০০১ সালে বিএনপি জামাত সরকার ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন সময়ে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ শেরপুর শহর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে শেরপুর শহর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।সে সময় রাজপথে থেকে তিনি বিএনপি জামাত সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্ব দেন। রাজপথে বারব