এস. আর. টুটুল.এম এল- তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে স্টোরজাত আলু নিয়ে কৃষক ও মজুদদারেরা বিপাকে পড়েছেন। তানোরে স্টোর ঘুরে জানা গেছে আলু চাষিরা মৌসুমে আলু বিক্রয়ের পরেও তারা পুনরায় আলু চাষের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও বেশী দামের আশায় আলুর স্টোরে আলু মজুত করেছে। কিন্তু বর্তমানে খুচরা বাজারে আলুর আশানুরুপ মূল্য থাকলেও পাইকারী বাজার দর অত্যান্ত কম।
প্রতি বিঘায় আলু চাষে কৃষকের ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা থরচ হয়। এতে ৩৩ শতাংশের বিঘা প্রতি ৭০ থেকে ৮০ মন আলু উৎপাদন হয়। কেজি প্রতি আলুর উৎপাদন খরচ পড়ে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ টাকা।
অথচ পাইকারী হিসেবে স্টোরে আলু বিক্রয় হচ্ছে ১১ টাকা থেকে ১৩ টাকা।ভরা মৌসুমের চেয়েও আলুর মূল্য কম ও উপকরনের অতিরিক্ত মুল্যে এবং শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধির কারনে আসন্ন মৌসুমের আগে ন্যায্য-মূল্যে আলু বিক্রয় করতে না পেরে আলুচাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
এদিকে মৌসুমী আলু ব্যবসায়ী মজুদদারগণ তাদের স্টোরে রাখা আলু বিক্রয় করে লাভের চেয়ে দ্বিগুন লোকশান গুণতে হচ্ছে। আলুর ন্যায্য মূল্য না পেলে তাঁদের পথে বসতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এবছর রাজশাহীর তানোরে আলু চাষ উপযোগী উর্ব্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ায় প্রচুর পরিমানে আলু চাষ হয়েছে। বিগত বছর আলুর ভালো ফলন ও পাইকারী বাজারে মূল্য বেশী পাওয়ার এবছর লাভের আসায় স্থানিয় কৃষক ও আলু চাষাবাদি আলু প্রজেক্ট ব্যবসায়িগণ অধিক আলু চাষ করেন। কিন্তু এবছর পাইকারী বাজারদরে ধস নামার কারণে সে আশার মুখে ছাঁই পড়েছে।
এছাড়াও এলাকার অনেক মৌসুমী আলু ব্যবসায়ী আলু ক্রয় করে স্টোরে মজুত করে রেখেছেন। মজুদারগণ ভরা মৌসুমে ১ বস্তা (৬০ কেজি) ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় আলু ক্রয় করেছে। ক্রয়কৃত আলু স্টোরজাতে বস্তা প্রতি খরচ ২৫০ টাকা, বস্তার দাম ৮০ টাকা বহন ও শ্রমিক খরচ ৪০ টাকা, মোট ১১২০ টাকা খরচ হয়েছে।
আলুচাষিরা জানান, স্টোরের ভাড়া দফায়- দফায় বাড়ছে, বাড়ছে শ্রমিকের মজুরী ও কীটনাশকের মূল্য, দেখার যেনো কেউ নেই। তানোরে সফল আলুচাষি লুৎফর রহমান বলেন, খুচরা বাজারে ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে। অথচ স্টোরজাত আলু পাইকরী মূল্য প্রতি কেজি ১১ টাকা থেকে ১৪ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। সমস্ত খরচ বাদদিয়ে পাইকারি পর্যায়ে তাদের প্রতি বস্তায় ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে।
এছাড়াও তানোর রহমান স্টোরের বেরহম (চড়া সুদে দাদন) কারবাররদের সুদি দেনা। তারা ঋণের নামে নব্য নিল চাষি হয়ে কৃষকের রক্ত চুষে খাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা এবিষয়ে সরকারী সহযোগিতা চেয়েছেন। তারা বলেন সরকারী ব্যবস্থায় আলু গুলো দেশ ও দেশের বাইরে নেয়ার ব্যবস্থা করলে তাদের দুরাবস্থা কমতো। সরকারী ভাবে কোন ব্যবস্থা না থাকায় আক্ষেপ করে তাঁরা বলেন, স্টোরজাত আলুর যে অবস্থা তা দেখার কেউ নেই।