স্টাফ রিপোর্টারঃ
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় প্রেমিকসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের পিবিআই’এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান। শনিবার (৭ আগস্ট) রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
হত্যার শিকার ওই স্কুলছাত্রী গোপালপুর উপজেলার জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা। সে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার বেঙ্গুলা গ্রামের নগেন চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮), ধনবাড়ী উপজেলার ইসপিনজারপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে সৌরভ আহম্মেদ হৃদয় (২৩), একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান টিটু (২৮), মজিবর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৭)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃত প্রেমিক শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস প্রতারণা করে ব্যবসায়ী সানি আহম্মেদ পরিচয়ে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কের পর গত ২ আগস্ট ওই স্কুলছাত্রীকে দেখা করার কথা বলে সানি আহম্মেদ স্থানীয় বাজারে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে তাকে রেস্টুরেন্টের কথা বলে মিজান নামের এক বন্ধুর ধনবাড়ী উপজেলার চাঁলাষ মধ্যপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর খোজেদা বুঝতে পারে সানি আহম্মেদ মুসলিম নয়। স্কুলছাত্রী সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলে শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস তাকে ওই বাসায় আটকে রাখে। সেখানে শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস তাকে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার আশঙ্কায় শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে।
তিনি আরও জানান, হত্যার পর সৌরভ আহম্মেদ হৃদয়, মেহেদী হাসান টিটু ও মিজানুরকে সঙ্গে নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে লাশটি বস্তাবন্দি করে যমুনা নদীতে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে যায়। সেখানে লোকজন থাকায় তারা নদীতে লাশ ফেলতে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে জেলার ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের পাশে খোদেজার লাশটি ফেলে রাখে তারা। পরদিন দুপুরে ভূঞাপুর থানা পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ে ওই স্কুলছাত্রীর লাশটি উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে রেওয়ারিশ লাশ হিসেবে ভূঞাপুরের একটি কবরস্থানের তাকে দাফন করা হয়। পরে গত ৫ আগস্ট ওই স্কুলছাত্রীর পরিচয় মিলে। এঘটনায় ভ‚ঞাপুর থানায় করা মামলাটি পিবিআই দায়িত্ব নেয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিবিআই মূল আসামিসহ চারজনকে গ্রেফতার করতে সম্ভব হয়। পরে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নিহত স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘নিখোঁজের তিনদিন পর পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি খোদেজা হত্যা হয়েছে। তার লাশটিও আমরা পাইনি। ছবি দেখে খোদেজাকে সনাক্ত করা হয়। আমি শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দাসসহ সকল আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।