স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকার সাভারে এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক এর প্রাণ বাঁচাতে রক্ত দান করলেন পুলিশ সদস্য বদিয়ার রহমান। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সাভার মডেল থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত( কং/১৮৭২)।
শনিবার দিবাগত গভীর রাতে (৩১ অক্টোবর) সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর প্রাণ বাঁচাতে এই রক্ত দান করেন তিনি।
জানা গেছে,শরীয়তপুর থেকে সাভার পৌরসভার সিআরপি এলাকায় মেয়ে মুক্তা বেগমের ভাড়াবাসায় বেড়াতে আসেন সত্তরোর্ধ্ব অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আজাহার দেওয়ান। হঠাৎ হার্টের সমস্যা দেখা দেয় তার। দ্রুত সময়ে চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে তাকে ভর্তি করা হয়।
বৃদ্ধের অবস্থার অবনতি হলে জরুরী (হার্ট সার্জারি)অপারেশনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে রক্ত প্রয়োজন। আর গভীর রাতে রক্তের প্রয়োজনে বিপাকে পড়ে রোগীর পরিবার।
তাৎক্ষণিকভাবে নিয়মিত রক্তদাতাদের খোঁজ করতেই একাধিক আত্মীয়ের সাহায্য চাওয়া হয়। গভীররাত হওয়ায় রক্ত সংকটে পড়ে রোগীর স্বজনরা। এক পর্যায়ে আত্মীয়ের মাধ্যমে পূর্ব পরিচিত সাভার মডেল থানায় কর্মরত কনস্টেবল রুনিয়া আক্তারের( নারী কং/১৪৩৫) শরণাপন্ন হন বৃদ্ধ রোগীর মেয়ে মুক্তা বেগম।
এক বয়স্ক বৃদ্ধকে বাঁচাতে জরুরী ‘ও পজেটিভ’ রক্ত চাই লিখে সাভার মডেল থানার অভ্যান্তরীণ মেসেঞ্জার গ্রুপে মেসেজ দেন নারী কনস্টেবল রুনিয়া আক্তার।রক্ত দিলে প্রাণে রক্ষা পাবে বৃদ্ধটি এমন খবর পেয়ে রক্ত দিতে দ্রুত ছুটে গিয়ে রক্ত দেয় পুলিশ সদস্য বদিয়ার রহমান।
কনস্টেবল বদিয়ার রহমান ৭ বছর ধরে রয়েছেন পুলিশে। এরই মধ্যে কয়েকবার স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, রক্ত দেওয়ার পর একটা প্রশান্তি হয়। মনে হয়, নিঃস্বার্থভাবে কারো উপকারে রক্ত দিলাম।
বদিয়ার রহমান বলেন, এক বৃদ্ধ মানুষের জরুরী রক্ত প্রয়োজন। ভাবলাম, রক্ত দিয়ে আসি। এরআগে আরও রক্ত দিয়েছিলাম। কারণ আমার রক্তে যদি অন্যের উপকার হয়, তাহলে আমার জন্ম সার্থক।’
তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেক তরুণ-তরুণীর রক্ত দেওয়া উচিত। কারণ আমাদের রক্তে বেঁচে যেতে পারে একটি প্রাণ। এছাড়া রক্তদানে স্বাস্থ্যেরও কোন অবনতি হয় না।’ দেশের সব দুর্যোগ-ক্রান্তিলগ্নে, আর্তমানবতার সেবায় সব সময় এগিয়ে এসেছে পুলিশ। পুলিশের গৌরবান্বিত ইতিহাসের অংশ হিসেবে আমিও জরুরি প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছি। পুলিশের এসব কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
রোগী সত্তরোর্ধ্ব অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আজাহার দেওয়ানের অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তিনি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলার সি ৪১১ নং কেবিনে সুস্থ আছেন।
সাভার মডেল থানা পুলিশের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আজাহার দেওয়ানের মেয়ে মুক্তা বেগম বলেন, সময় মত রক্ত পেয়ে বাবার চিকিৎসা করাতে পেরেছি। রক্তদাতার কাছে আজীবন ঋণী হয়ে থাকবো।