সামিয়া খন্দকার- এর কলাম থেকে; এস আর টুটুল এম এল!
জীবন যুদ্ধে স্বামীর পাশাপাশি ডাব বিক্রি করে সংসারের হাল ধরেছেন শ্রীমতি লাবনী রজক (৩০)। রাত-দিন পরিশ্রম করে পরিবারের আয় উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
লাবনী রজক মূলত নওগাঁর মেয়ে। ১৭ বছর আগে বিয়ে হয়ে আসেন রাজশাহীতে। স্বামী শ্রী কমল রজক (৪২) একজন বাকপ্রতিবন্ধী। তিনি স্থানীয় একটি পেট্রোল পাম্পে প্রহরী হিসেবে কাজ করেন। বেতন মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকা। এ টাকায় সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় বলে জানান লাবনী রজক। সংসারের অভাব দূর করতে তাই নিজেই নেমে পড়েন ব্যবসায়।
৪ বছর ধরে নগরীর কুমারপাড়ার মোড়ে ডাব বিক্রি করছেন লাবনী। পরিবারের সাথে বাস করেন আলুপট্টি এলাকায় নিজেদের বাসায়। ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় তার জীবনযুদ্ধ। তিনি নিজে রাজশাহীর বিভিন্ন আড়ৎ থেকে ডাব কিনে নিয়ে আসেন। দিনভর তা বিক্রি করেন। ক্রেতা আসলে পাঁকা হাতে ডাব কেটে এগিয়ে দেন হাসি মুখে।
তিনি জানান, নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা, বানেশ্বর, পুঠিয়া, চৌদ্দপাই ইত্যাদি এলাকার আড়ৎ থেকে ডাবগুলো আনেন তিনি। বেশীরভাগ সময় ডাবগুলো আসে বরিশাল থেকে। বর্তমানে ডাবের আকার অনুযায়ী দাম ৬০-৮০। দিনে গড়ে ৫ হাজার টাকার বিক্রি হলে লাভ থাকে ২৫০ টাকা। লকডাউনে বেঁচা-বিক্রি একেবারেই ছিল না। তবে এখন বেশ ভালোই চলছে ব্যবসা বলে জানিয়েছেন তিনি।
লাবনী বলেন, আমার ছেলে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। ছেলের পড়াশুনার পেছনে স্বামীর বেতনের টাকা বেশিরভাগ চলে যায়। সে টাকা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর। তাই আমি ব্যবসা শুরু করেছি। যা লাভ আসে তা দিয়ে ভগবান আমাদের দিন ভালভাবেই পার করে দিচ্ছেন। সবচেয়ে বড় সমর্থন পাই আমার শ্বাশুড়ির। আমি ব্যবসা করি, উনি সংসার সামলান। এই সহযোগীতাটুকু না পেলে আমার ব্যবসা করা সম্ভব হতো না।
ডাব কিনতে আসা জাহাঙ্গীর আলম জানান, অনেকদিন থেকেই ডাব বিক্রি করতে দেখছি উনাকে। অনেকেই পরিবারে অভাব থাকলে মানুষের কাছে হাত পাতেন। কিন্তু তিনি ব্যবসা বেছে নিয়েছেন, বিষয়টি আসলেই সম্মানজনক।