মীযান মুহাম্মদ হাসান
দুয়ারে দাঁড়িয়ে পবিত্র মাহে রমজান। রাত পেরুলেই চাঁদ দেখা স্বাপেক্ষে আগামীকালই হতে পারে পহেলা তারাবি। ভোর রাতে খেয়ে রাখতে হবে রোজা।
বছর ঘুরে প্রতি বছর রমজান মাসে রাখতে হয় এই ফরজ রোজা। পূর্ববর্তী উম্মতের জন্যও ছিল এ রোজার বিধান।
পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারার ১৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন-
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের (রোযার) বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা সংযমশীল হতে পারো।
সিয়াম এটি আরবি শব্দ। বাংলায় আমরা রোজা হিসাবে চিনে আসছি। যা মূলত ফারসি শব্দ।
পরিভাষায়, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ফজর উদিত হওয়ার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার এবং যৌনবাসনা পূরণ করা থেকে বিরত থাকাকে রোজা বা সিয়াম সাধনা বলে।
তাফসিরে আহসানুল বয়ানে উল্লেখ করা হয়, এ ইবাদতটা যেহেতু আত্মাকে পবিত্র ও শুদ্ধি করণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই তা তোমাদের পূর্বের উম্মতের উপরেও ফরয করা হয়েছিল। এই রোযার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হলো তাকওয়া, পরহেযগারী তথা আল্লাহভীরুতা অর্জন। আর আল্লাহভীরুতা মানুষের চরিত্র ও কর্মকে সুন্দর করার জন্য মৌলিক ভূমিকা পালন করে থাকে।
এজন্যই রমজান মাসকে বলা হয়, আত্মশুদ্ধির মাস। সবর ও ধৈর্যের মাস।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রমজানে রোজা রাখবে, তার পিছনের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -বুখারী শরীফ
আরেক বর্ণনায় এসেছে, রাত জেগে তারারির নামাজ আদায় করল, তার জন্যও গুনাহ মাফের ওয়াদা রয়েছে। তাই প্রতিটি মুসলমানের জন্য করণীয় হচ্ছে, আমরা রমজানে রোজা রাখব, রাতে তারাবি পড়াতে মনোযোগী হবো এবং পূর্ববর্তীদের মতো আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধি অর্জন করে গুনাহ মুক্ত জীবন যাপনের চিন্তা করব। যা আমাদের পরকালের মুক্তির উসিলা হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রমজানের গুরুত্ব অনুধাবন করে গুনাহ মুক্ত জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন
লেখক : ইসলাম বিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক