রবিউল আউয়াল রবি ময়মনসিংহ :
নবগঠিত ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকসেবা বৃদ্ধির জন্য রাজস্ব আদায় বাড়াতে কাজ করছে মসিক। এরই লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশনের বর্ধিত ও ইজারা বিহীন বাজারগুলোকে শৃঙ্খলার আওতায় আনার জন্য সম্প্রতি মাসিক টোকেনে ভাড়ায় বরাদ্দ দেয় মসিক। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দীর্ঘদিন ধরে কর ফাঁকি দেয়া সংঘবদ্ধচক্র।
মসিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে,
সম্প্রতি চলতি বছরের ১০ মার্চ থেকে নগরীর মেছুয়া বাজার অন্তর্ভুক্ত ড্রেনকালভাটের উপর দীর্ঘদিন ধরে যারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা করে আসছিল, তাদেরকে রাজস্বের আওতায় আনার জন্য মাসিক তিন হাজার টাকা রাজস্ব প্রদানের শর্তে টোকেন লিজ দেয় মসিক।
মেছুয়া বাজার ইজারাদার মোঃ সোহেল ইসলাম বলেন, সিটি কর্পোরেশন রাজস্ব আদায়ের লক্ষে চলতি মাসে বেশ কয়েকজনকে টোকেন লিজ দেয়। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করার জন্য বাজারে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করছে, এতে আমরা যারা ইজারাদার রয়েছি তারা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি, পাশাপাশি বাজারে ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশনের আওয়াতাধীন মেছুয়া বাজারের রাস্তা ও ড্রেনগুলো অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত দখল করে মোঃ হাফিজুর রহমান টিপু, ফয়সাল, তপন, মোঃ কাজিম উদ্দিন কাজল, জাহাঙ্গীর, লিটন, অসীম, বিদ্যুৎ, এরশাদ, মামুন হোসেন, কালাম মিয়া, মোঃ রাব্বির খান, মোঃ কাদির মিয়া, মোঃ জুলহাস, মোঃ খলিল মিয়া, শ্রী সুনীল পাল, মোঃ হারুন উর রশিদ, মোঃ লিটন খান, মোঃ হালিম মিয়া, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ মিনহাজুর রহমান রাজু, মোঃ আনিছুর রহমান, মোঃ আলিফ, মোঃ সুমন মিয়া নিজেদের খেয়ালখুশী মতো দোকান বসিয়ে প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ২২০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করে আসছিল । তাছাড়াও অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তি করে করে নিয়মবহির্ভূতভাবে লাখ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ।
অভিযোগ প্রসঙ্গে পাইকারি চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ কাজিম উদ্দিন কাজল বলেন, টাকা নেয়ার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।আর যাদেরকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাদেরকেই যেন বরাদ্দ দেয়া হয়, এটাই আমার দাবি।
অপর খুচরা ও পাইকারী চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ হাফিজুর রহমান টিপু বলেন, এ বিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
ভাড়া দিয়ে টাকা নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলে খুচরা ও পাইকারী চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমি কোন ভাড়া নেই না, আমার নিজস্ব ব্যবসা আছে। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।
এ প্রসঙ্গে মসিকের বাজার পরিদর্শক খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১২ জন ভাসমান অসহায় ব্যবসায়ীকে পূর্ণবাসনের জন্য এবং রাজস্ব আদায়ে মেছুয়া বাজারে মাসিক ভাড়ায় ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিটি কর্পোরেশনের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এসব জায়গা গুলো উদ্ধার করে সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বাড়াতে যায়গা গুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এতেই দীর্ঘদিন ধরে কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা করে আসা অসাধু ব্যবসায়ীরা বাঁধা দেয়। যা নিয়ে এখন বাজারে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়েছে।