(পবিপ্রবি প্রতিনিধি) :
চলছে বৈশ্বিক মহামারী।কেউ জানেনা এর শেষ কোথায়।বৈশ্বিক মহামারীতে বিশ্বের দেশগুলোর শিক্ষাব্যবস্থা তাই অনেকটাই থমকে আছে।কিছু দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রয়েছে।কিন্তু আমাদের দেশে
শিক্ষা কার্যক্রম গত বছরের মার্চ মাস থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।
গত দেড় বছরের বিভিন্ন সময়ে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়াতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামে বসবাসরত শিক্ষার্থীরা। আরো বেশি ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে ছোট শিশুদের উপর।কারণ তারা এত বড় বন্ধ ভেবে কখনো বই নিয়ে পড়তে বসেনি।সরকার বিভিন্ন সময় স্কুল-কলেজ খোলার ইঙ্গিত দিলেও করোনা বেড়ে যাওয়াতে খোলা সম্ভব হয়ে উঠেনি।তারা এ বিষয়টিকে অনেকটা নেতিবাচক হিসেবে দেখেছে। এমতাবস্থায় তারা দীর্ঘ সময় ধরে বইবিমুখ থেকেছে।অভিভাবকরাও তাদের ছোট শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে।গ্রামের অভিভাবকরা অনেকটাই অসচেতন।তারা তাদের বাচ্চাদের বাসায় পড়তে বসারও তাগিদ দেয়নি।এর ফলে দীর্ঘসময় ধরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবিমুখ থেকেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে গ্রামের একজন অভিভাবক জানান,দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। বাচ্চারা স্কুল-কলেজে যেতে না পারায় পড়াশোনার উদ্যম একেবারেই হারিয়ে ফেলেছে।তারা অনেকটাই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।আমরা অভিভাবকেরাও বাচ্চাদের বাসায় পড়ার জন্য তাগিদ দিচ্ছি না।বাচ্চারা তাই সারাদিন খেলাধুলায় মেতে থাকে,গেম খেলে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘ বন্ধে বাচ্চারা পড়াশোনা করছে কি না প্রসঙ্গে শহরের একজন অভিভাবকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার বাচ্চাকে আমি বাসায় ২ টি প্রাইভেট দিয়েছি।পাশাপাশি সে স্কুলের ক্লাস অনলাইনে করছে।রুটিনমাফিক সে সবকিছু করছে।আশাকরি খুব বেশি পড়ার ক্ষতি হয় নি।
আসলে গ্রামের ছোট থেকে বড় সকল শিক্ষার্থীরাই শিক্ষাবিমুখ রয়েছে।করোনাকালে তারা পড়াশুনা করতে অপারগতা পোষণ করছে।অসংখ্য শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। যোগ দিচ্ছে কাজে যাতে করে বাড়তি কিছু ইনকাম আসে।পরিবারও তাই তাদের সন্তানকে কাজে পাঠাচ্ছে।অনেক সময় স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হলেও বেশিরভাগ গ্রামের শিক্ষার্থীই বিচ্ছিন্ন থেকেছে।কারণ তাদের নেই ক্লাস করার মতো ডিভাইস, নেই নেট কেনার সামর্থ্য। গ্রামের বেশিরভাগ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী জানেই না অনলাইন ক্লাস কি।আর যাদের স্মার্ট ফোন রয়েছে তারা দীর্ঘ বন্ধে গেম নামক অন্ধকার জগতেই পড়ে রয়েছে।অনলাইন ক্লাস কিংবা বাসায় নিয়মিত যে পড়তে বসতে হবে সেটা তারা ভুলেই গেছে।আর শহরে শিক্ষার্থীরা সবসময় অভিভাবকের নজরে থাকে,তাদের ডিভাইস স্বল্পতাও তেমন নেই।আর শহুরে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ সময় করে আগে থেকেই গেম খেলে।কিন্তু গ্রামে যেসব শিক্ষার্থীর ডিভাইস রয়েছে বা স্মার্টফোন রয়েছে তারা দীর্ঘ বন্ধে পড়ালেখা ভুলে গিয়ে নতুন করে গেমে বুদ হয়ে পড়েছে।দিনশেষে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।আর অনেকাংশেই পিছিয়ে পড়ছে শহরের শিক্ষার্থীদের চেয়ে।