সরকারের সব নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে সোমবার ৩৭ জোড়া ট্রেন চালাচল করেছে। তবে বিনা প্রয়োজনে রেল ভ্রমণকে নিরুৎসাহিত করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করেছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
তিনি জানিয়েছেন, স্টেশনে জনসমাগম এড়াতে কাউন্টার না খুলে অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। বিনা কারণে যেন কেউ ট্রেন ভ্রমণ না করে। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ভ্রমণ করতে হবে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে এসে মন্ত্রী স্টেশনের বিভিন্ন প্লাটফর্ম ঘুরে দেখেন ও ট্রেনে উঠে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় স্টেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ছিলেন।
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, চলমান বিধিনিষেধ বাড়ানো হলেও সরকার গণপরিবহন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালানোর নির্দেশ দিয়েছে, রেলওয়ে গণপরিবহনের মধ্যে পড়ে। তাই আমরা সরকারের সব নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে আজ (সোমবার) থেকে রেলপথ চালু করেছি। এখন আমাদের ১০৮টি আন্তঃনগর ট্রেন আছে। এর মধ্যে ২৮ জোড়া তথা ৫৬টি আন্তঃনগর এবং ১৮টি মেইল কমিউটার ট্রেন সোমবার থেকে চালু করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আগামীতে আস্তে আস্তে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে। তবে এখন টিকিট অনলাইন থেকে সংগ্রহ করতে হবে। সংক্রমণের কারণে কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হবে না। আর টিকিট ছাড়া কাউকে প্লাটফর্মেও ঢুকতে দেওয়া হবে না।
তিনি জানান, এক সময় আমরা সীমিত সংখ্যক টিকিট অনলাইনে বিক্রি করতাম। আস্তে আস্তে এটা ৫০ শতাংশে এনেছি। আমরা চাচ্ছি, আগামীতে অনলাইনে টিকিট বিক্রির সংখ্যা আরও বাড়াতে।
কমিউনিটি ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে বিক্রি হচ্ছে এবং দামও বেশি নেওয়া হচ্ছে- এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রী বলেন, টিকিটের দাম বাড়ানো হয়নি। তাই বেশি দাম নেওয়ার সুযোগও নেই। কেউ যদি বেশি দাম নেয়, আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এখন দুটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য- ট্রেন সঠিক সময়ে ছাড়া। দ্বিতীয় লক্ষ্য- যাত্রীরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেনে চলাচল করে, এটি নিশ্চিত করা। আমাদের অসাবধানতার কারণে যেন করোনা পরিস্থিতি আবার ঝুঁকিতে না পড়ে।
এখন যাত্রীর চাপ কম, স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। কিন্তু যাত্রী সংখ্যা বাড়লে এটা ঠিক থাকবে কি না? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, গতবছরও লকডাউন ছিল। এরপর যখন রেল চালু করা হয়, তখন আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছি, সবাই তা দেখেছে। এক বছরে আমাদের অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা বেড়েছে। আশা করছি, এখন আগের চেয়ে আরও বেশি আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী সেবা দিতে পারব।
এদিকে টানা ৪৯ দিন পর আজ (সোমবার) সারা দেশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখেই ঢাকা ছাড়ছে ট্রেনগুলো। তবে প্রথমদিন স্টেশনে যাত্রীর চাপ কম দেখা গেছে। প্লাটফর্মগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রেন ছাড়লেও যাত্রীর চাপ কম। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও জিআরপি থানা পুলিশ সামাজিক দূরত্ব মেনে ট্রেনে ওঠার বিষয়টি নিশ্চিত করছে। ট্রেনে একটি করে আসন ছেড়ে দিয়ে বসতে দেখা গেছে যাত্রীদের।