নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ এস আর টুটুল এম এল!
দেশে মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রমণ থেকে মানুষের প্রাণরক্ষায় আ’লীগ সরকার দেশে বেশ কয়েক দফা লকডাউন বাস্তবায়ন করেছে। তাই দেশে করোনাকালিন বিধিনিষেধ জারি করায় দেশের বিনোদনকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। বৈশ্বিক প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারনে থমকে গেছে গোটা পৃথিবী, অসহায় হয়ে পড়েছে নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্তবানসহ নিন্ম-আয়ের বিভিন্ন শ্রেণী পশার মানুষ জীবনযাত্রা।
বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যাওয়াই সরকারিভাবে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। তাই পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়া হচ্ছে স্কুল- কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, উপাসনালয়সহ বিভিন্ন পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো। তবুও আগের মতো স্বাভাবিক হয়নি মানুষের জীবন ও জিবীকা ধারনে কর্মপরিধিয় কার্যক্রম, নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষসহ অনেকেই পড়েছেন অভাব-অনোটনে।
করোনাকালিন বন্ধ হয়ে যাওয়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীদের মতো অনেক কষ্টে অনাহারে-অর্ধহারে দিন কাটছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রা ও সার্কাস পার্টির শিল্পী, কোলা-কৌশলী ও পুশা বন্যপ্রাণীদের।
প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বিনোদন মূলক সার্কাস খেলা বন্ধ থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট পুশা বন্যপ্রাণীগুলোর জুটছেনা নিয়মিত খাবার। তাই সার্কাস পার্টির বিনোদন প্রধান প্রাণী, হাতির (মাহুত) পরিচালক কফিল উদ্দিন আর্থিক অভাবগ্রস্ততায় বাধ্য হয়েই (হাতি) নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন, পথচারীদের কাছে ৫-১০ টাকা সাহায্য নিয়ে যা আয় হয় তাই দিয়ে (সার্কাস পার্টিতে) খেলা দেখানো এই বিশালদেহী হাতি ও হাতির (মাহুত) খফিল উদ্দিন কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করছেন।
তবে কফিল উদ্দিন বলেন, সবকিছু খোলা হলে এবং দেশ সাভাবিক অবস্থা ফিরে আশলে আমারা আগের মত দেশের বিভিন্নস্থানে সার্কাস খেলা করতে পারলে মানুষের কাছে আর সাহায্য চাইব না।
সম্প্রতি তানোর উপজেলার কাশিম বাজার এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে লম্বা শুঁড় নাড়িয়ে পথচারীদের শুভেচ্ছা- সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে টাকা তুলতে দেখা যায় এই বিশাল আকক্রিতীর হাতিকে।
এই সময় হাতির পিঠে বসেছিলেন হাতির (মাহুত/ পরিচালক) কফিল উদ্দিন।
দেখা যায়, রাস্তাার বিভিন্ন যানবাহনের সামনে হাতিটি দাঁড়িয়ে বিশাল লম্বা শুঁড় দিয়ে পথচারীদের নিকট সাহায্যে চাচ্ছে।
এরপর যানবাহনে থাকা মানুষেরা যার যেমন মনচাইছে সে তেমন সাহায্য করছেন। অনেকেই হাসি মুখে হাতির শুঁড়ে গুঁজে দিচ্ছেন সাধ্যমতো নগ অর্থ। আর হাতিটি শুঁড় দিয়ে টাকা নিয়ে তুলে দিচ্ছে তার পিঠে বসে থাকা পরিচালকের হাতে।
ওই সময় পথচারী মোটরসাইকেল আরোহী (সাংবাদিক সোহানুল হক পারভেজ) বলেন, আমি দেখলাম অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে যানবাহনের সামনে এসে দাঁড়াচ্ছিল হাতিটি। সুন্দরভাবে আমার গাড়ীর সামনে তার শুঁড় এগিয়ে দিলো। হাতির দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে আমি একটি ১০ টাকার নোট গুঁজে দিলাম হাতির শুঁড়ের মধ্যে। তৎক্ষুনাৎ সে তার পিঠের ওপর বসে থাকা মাহুতকে টাকাটি তুলে দিলো এবং তার শুঁড় দিয়ে আমার মাথায় বুলিয়ে দেন।
হাতির পরিচালক কফিল উদ্দিন জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সার্কাস খেলা দেখিয়ে টাকা রোজগার করে আমারা সংসার চালাই ও হাতিটির খাবার জুগাড় করি। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন সব বন্ধ থাকায় হাতিকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় হাতিকে দিয়ে সাহায্য নিতে নেমেছি। সে বলেন, করোনার সময়ে কোথাও কোনো মেলা বা সার্কাস হচ্ছে না। সার্কাস না হলে কী করে চলবো? হাতিকে কী খাওয়াবো? আর আমিই বা খাবো কী? মানুষ খুশি হয়ে যে- যা দেয়, তাই গ্রহণ করে হাতি। আর তা দিয়েই চলে আমাদের পেট।