নিউজ ডেস্ক; এস আর টুটুল এম এল!
তানোর উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২৭- অক্টোবর) তানোরে ৪ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও ১৩ জন ওয়ার্ড সদস্য মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন।
গত বুধবার (২৭- অক্টোবর) মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষের দিনে ১নং কলমা ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রেজাউল ইসলাম ও আঃ মালেক, কামারগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জাইদুর রহমান এবং পাঁচন্দর ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাদেকুল ইসলাম মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন।
এদিকে উপজেলার তালন্দ ইউপিতে সরব রয়েছেন, আ’লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
এই ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বৈধ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আনারস প্রতিকে রয়েছেন ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি নাজিমুদ্দিন বাবু ও মটর সাইকেল প্রতিকে ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি রইস উদ্দিন বাচ্চু।এছাড়াও এখানে চারদলীয় ঐক্যজোট থেকে জামায়াত নেতা আক্কাছ আলী দেওয়ান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীকে বৈধ প্রার্থী রয়েছেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে পুণরায় আ’লীগ দলিয় নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছে আ’লীগ।
এদিকে গত ২০১৬ ইং সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তালন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি রইচ উদ্দিন বাচ্চুকে, স্থানিয় সাংসদ ও তৎকালিন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী আগামি/ অদ্য ২০২১ইং সালে তালন্দ ইউপি পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে, আবুল কাশেমকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন।
চলতি ২০২১ইং এ’ তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তালন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নাজিমদ্দিন বাবু ও যুবলীগের সভাপতি রইচ উদ্দিন বাচ্চুকে মনোনয়ন বঞ্চিত করে নেতৃত্বে দুর্বল ও তৃণমূলের নেতাকর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন বর্তমান সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়। এতেকরে তৃণমুলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের মাঝে মিশ্রো প্রতিক্রিয়া, ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে চারদলীয় ঐক্যজোট থেকে জামায়াত নেতা আক্কাছ আলী দেওয়ান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে বৈধ প্রার্থী হিসেবে সরব রেখেছেন ভোটের মাঠ, তারও রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
নৌকা প্রতীক নিয়ে, উন্নয়নের ধারা অব্যহত রেখে অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরও একবার সুযোগ চেয়ে ⛵ নৌকা প্রতীকে ভোট চান চেয়ারম্যান আবুল কাশেম।
সাধারণ ভোটারগণ অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, তালন্দ ইউপি নির্বাচনে আ’লীগ দলিয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বর্তমান’ সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে, আমরা কাশেম চেয়ারম্যান কে নয়, নৌকাকে তথা শেখ হাসিনাকে ভালোবেসে নৌকায় ভোট দিব। আবার অনেকেই বলেন, কাশেম ছাড়াও’ আ’লীগ, নাজিমউদ্দিন বাবু বা রইচ উদ্দিন বাচ্চুকে মনোনয়ন দিতে পারতেন। কেনো না আবুল কাশেম (২) দুই বার বিপুল ভোটের ব্যবধানে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বপালন করছেন।
তারা আরও বলেন, গত নির্বাচনের আগের নির্বাচনে সামান্য ভোটে ফেল করেছিলেন নাজিমউদ্দিন বাবু, তারও ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে, এছাড়াও তরুন নেতৃত্ব ও যুবক- নবিন, প্রবিন সকলের আস্থাভাজন, তালন্দ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রইচ উদ্দিন বাচ্চুেকে এবার নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দওয়ার কথা দিয়েছিলেন সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী।
আর কাশেম চেয়ারম্যান বলেছিলেন এটাই তার শেষ নির্বাচন।
স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন মহলের অভিমত, আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী সিলেকশন করা সঠিক হয় নাই। ফলে সতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে মটর সাইকেল প্রতিক নিয়ে এগিয়ে আছেন যুবলীগ নেতা রইচ উদ্দিন বাচ্চু। ওদিকে নাজিমউদ্দীন বাবুও আনারস প্রতিকে দখল করে রেখেছেন ভোটের মাঠ। এদিকে চার দলীয় ঐক্যজোট থেকে জামায়াত নেতা আক্কাছ আলী দেওয়ান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে বৈধ প্রার্থী হিসেবে গুছিয়ে রেখেছেন ভোটের মাঠ, তারও রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
তালন্দ ইউপিতে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার ভোট আছে, তন্মধ্যে, সতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রইচ উদ্দিন বাচ্চুর ভোট ব্যাংকে প্রায় অর্ধেকের বেশি ভোট রয়েছে তালন্দ ইউপির ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের লসিরামপুর ও মোহর গ্রামে, এসব ভোট পেলেই তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন বলে মনে করেন সচেতন মহল। তবে ওই গ্রামেরই সন্তান আক্কাস আলী দেওয়ান চশমা প্রতিকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রয়েছেন, ফলে এখানে হবে দ্বীমুখি ভোট প্রয়োগ। আর লালপুরের সন্তান আবুল কাশেম ও নাজিমউদ্দিন বাবু ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন মুখো-মুখি!
মোহর গ্রামের শিক্ষিত ও সমাজিক রাজনৈতিক সচেতন ব্যাক্তিত্ব, ডা, রেজাউল বলেন; ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন তো আর সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন নয়, তাই ভোটারদের কাছে প্রতিকের তেমন কোনো গুরুত্ব নেই। তারা গুরুত্ব দেয় প্রার্থীর দৈনন্দিন আচার ব্যবহার, আর্থিক স্বচ্ছলতা, উন্নয়ন মানসিকতা ইত্যাদি।
এছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যান একটি অলাভজনক আশনের পদ, এখানে দায়িত্ব পালন করতে গেলে প্রার্থীকে অবশ্যই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হতে হবে। আর্থিকভাবে দুর্বল কোনো প্রার্থী চেয়ারম্যান হলে সে প্রকল্পের টাকায় ভাগ বসাবে এতে এলাকার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে, আর সেটি হলে সরকারের ভাবমুর্তিও ক্ষুন্ন হবে। অধিকাংশক্ষেত্রে স্থানীয় নির্বাচনে ভোটারগণ এসব বিচার-বিশ্লেষণ করেই ভোট প্রয়োগ করেন।