এস আর টুটুল এম এল – তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি ;
শোকাবহ আগস্ট: হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হারানোর মাস!
আজ ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে বিশেষ দোয়া ও বিনম্র শ্রদ্ধায়- শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীগণ।
তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেতা গোলাম রাব্বানীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ্যাডভকেট, মকবুল হোসেন খান, সাবেক সহ-সভাপতি- রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,
শরিফ খান, সহ-সভাপতি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ, খাদেমুন নবী চৌধুরী বাবু, সদস্য- রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা, আবদুল আজিজ, সহ-সভাপতি তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগ, আবদুস সালাম, সদস্য- রাজশাহী জেলা পরিষদ। আরও উপস্থিত ছিলেন, আব্দুল্লা আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক- তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগ।
ইমরুল হক, মেয়র- তানোর পৌরসভা ও সভাপতি তানোর পৌর আওয়ামী লীগ।
সাইদুর রহমান, মেয়র- মুন্ডুমালা পৌরসভা ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্ডুমালা পৌর আওয়ামী লীগ।
রাকিবুল হাসান সরকার (পাপুল)- সাংগঠনিক সম্পাদক, তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগ।
জাইদুর রহমান, সভাপতি- তানোর উপজেলা কৃষকলীগ, আরব আলী (কাউন্সিলর) সাধারণ সম্পাদক তানোর উপজেলা কৃষক লীগ।
মৃদুল কুমার ঘোষ- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক-
রাজশাহী জেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ।
রাজিব সরকার হিরো, সভাপতি- তানোর পৌর আওয়ামী যুবলীগ, ওহাব সরদার- সাধারণ সম্পাদক, তানোর পৌর আওয়ামী যুবলীগ ও আরিফুজ্জামান বাচ্চু মোল্লা, আওয়ামী লীগ নেতা, তানোর পৌরসভা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তানোর উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীগণ।
জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এ্যাডভোকেট, মকবুল হোসেন খান ও সঙ্গিয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বলেন; বাঙালি জাতির শোকের মাস আগস্ট- মাস, এ মাসেই জাতির ইতিহাসে কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু, প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্রের হাতে বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, বিশ্বের লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা, বাংলা ও বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য পুরুষ, বাঙালির নিরন্তন প্রেরণার চিরন্তন উৎস, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন।
১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট শেষ রাতে (১৫ আগস্ট) ঘাতকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করে। তাকে সপরিবারে নিঃশেষ করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, সদ্য বিবাহিত পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসেরকে সেখানে হত্যা করা হয়। বেইলি রোডে সরকারি বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবি সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টুকে। আরেক বাসায় হত্যা করা হয় তার ভাগ্নে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে।
বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে শুনে সেখানে যাওয়ার জন্য রওনা দেন বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ। তবে ৩২ নম্বরের সামনে পথভ্রষ্ট সেনা কর্মকর্তারা তাকে প্রথমে বাধা দেয় ও পরে হত্যা করে। এছাড়া ওইদিন ৩২ নম্বরের বাড়িতে কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বের বুকে নিন্দিত ও ঘৃণিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ হয়ে আছে।
সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে বাঙালি জাতি।
সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর বড় সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ও ছোট বোন শেখ রেহানা শেখ হাসিনার স্বামী প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান।
’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নরপিচাশ রূপি খুনিরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। ১৯৯৬ সালে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে এ বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের কয়েকজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন শেখ হাসিনা।
এছাড়া এ শোকের মাসেই আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার জন্ম হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। ওই হামলার টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।