এস. আর. টুটুল. এম. এল- তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি;

রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকায় মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন বিধবা এক ভাগনে বউ (২৬)।
ঘটনা সুত্রে জানা গেছে, গত ২২ আগষ্ট রোবিবার- তানোর থানায় উপস্থিত হয়ে মামা শ্বশুর উত্তম কুমার কর্মকারের (৩৯) এর নামে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী ভাগ্নে বউ।

অভিযুক্ত উত্তম কুমার কর্মকার তানোর পৌর সদর শীবতলা গ্রামের পূর্ণ কর্মকারের পুত্র। পশায় দলিল লেখক (মুহুরী) তিনি তানোর সাবরেজিস্টার দলিল লেখক সমিতির কোষাধক্ষ।
ভুক্তভোগী বিধবা তাঁর দূরসম্পর্কের ভাগনে বউ হন। ভাগ্নে বউও একই এলাকার বাসিন্দা। তিন বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যান। আট বছর বয়সী একমাত্র পুত্র সন্তান নিয়ে স্বামীর ভিটায় বসবাস করে আসছিলেন ওই বিধবা নারী।
এলাকাবাসী ও তানোর থানা-পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় আড়াই বছর ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে আসছেন, মামা শ্বশুর উত্তম কুমার।

গত ২ আগস্ট বিধবার বাড়িতেই তাঁদের আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন স্থানীয় প্রতিবেশীরা। তানোর থানা পুলিশে খবর দেওয়া হলে, পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
ভুক্তভোগী মামলা না করায় শেষ পর্যন্ত মামা শ্বশুর উত্তম কুমারকে সন্দেহভাজন হিসেবে আদালতে তোলে পুলিশ। ওই দিনেই তিনি জামিনে বেরিয়ে এশে ভাগনে বউয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যান।
কিন্তু বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান উত্তম, এ কারনে রাজশাহী মহানগরীতে এক দফা আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন ওই বিধবা নারী।

স্থানীয়রা জানান, উত্তমের পক্ষ নিয়ে জনৈক টি.আর সুনিল, তখন তাকে বিয়ে করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে রামেক হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসেন। এবং কয়েক দিন আত্মগোপণে রেখে আপোষের চেষ্টাও করেন। তবে আপোষের চেষ্টা ব্যর্থ হলেও সে উত্তমের কাছে থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় গ্রামবাসি নাটের গুরু সুনিলের বিচার দাবি করেছে।
এদিকে মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ওই বিধবা নারী উল্লেখ করেন, প্রায় আড়াই বছর ধরে তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে আসছেন উত্তম। টি.আর সুনিলের সহযোগীতায় উত্তম বিয়ের প্রলোভন দিয়ে গত ৭ আগস্ট তাকে কৌশলে অপহরণ করে রাজশাহীতে নিয়ে যান। এছাড়াও ১০ থেকে ১২ আগস্ট কামারগাঁ ইউপির ভারসো গ্রামে এক বোনের বাসায় নিয়ে অবস্থান করেন। ওই সময় বিয়ের প্রলোভনে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন উত্তম। এরপর ১২ আগস্ট তাঁকে নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গণেশপাড়ায় আরেক আত্মীয়র বাড়িতে যান, সেখানে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। পরে তাঁকে নিয়ে ফিরে আসেন রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ি এলাকায় আরেক আত্মীয়ের বাড়িতে। সেখানে ২১ আগস্ট পর্যন্ত একই কায়দায় ভাগ্নে বউকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মামা শ্বশুর। বিয়ের জন্য চাপ দিলে ২১ আগস্ট বিকেলে তাঁকে নিয়ে রাজশাহী নগরীর কুমারপাড়া গঙ্গা মন্দিরে যান। কিন্তু বিয়ে না করে তালবাহানা করতে থাকেন উত্তম। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় গড়ায়।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান।
(ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, রোবিবার বিকেলে উত্তম কুমার কর্মকারের নামে ওই বিধবা অবশেষে তানোর থানায় অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ৩” তবে রোবিবার সন্দেহভাজন হিসেবে উত্তম কুমারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে বোয়ালিয়া মডেল থানা-পুলিশ।
তানোর থানা-পুলিশ এই মামলায় তাঁকে শ্যোন অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) দেখানো হয়েছে।
এছাড়া ভুক্তভোগী ওই নারীকে সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসিতে) পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তানোর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রাকিবুল হাসান।