নিউজ ডেস্ক; এস আর টুটুল এম এল!
রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (০১- অক্টোবর) বিকেল ৫-৩০ মিনিটের সময় উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে বর্ধিতসভা চলাকালিন সময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সন্ধ্যায় ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তানোর উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে বর্ধিত সভা শুরু হয় বিকেল ৫ টার দিকে। জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা সেখানে বক্তব্য দেন।
তবে মঞ্চের সামনের সারিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে বসতে দেন নাই স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর অনুসারীরা।
ওই বিষয় নিয়ে মামুনের সমর্থকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সভাস্থলে চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বাইরে শুরু হয় ইট পাটকেল নিক্ষেপ।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা পালিয়ে অডিটরিয়ামে পাশে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগামী ১১ নভেম্বর রাজশাহীর তানোরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে শুক্রবার বিকেলে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরকে নিয়ে বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়।
এতে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ছাড়াই এই বর্ধিত সভার আয়োজন করে এমপির অনুসারীরা।
সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে ডাকা না হলেও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন সভাস্থলে গেলে এমপির অনুসারীরা তাদের ওপর চড়াও হয়। এরপরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লা আল মামুনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পরে থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে সন্ধ্যায় হলরুমে আবারও সভা শুরু হয়।
তবে সভা শুরুর আগে তানোর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, ইউএনও পংকজ চন্দ্র দেবনাথ ও চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ওই বৈঠক করেন।
পরে ভাঙচুরের ঘটনায় দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ তাদের অনুসারীদের নামে এ ঘটনায় মামলার নির্দেশ দেন। এ সময় রাজশাহীর তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও তাদের অনুসারীরা তানোর পৌরসভা চত্বরে অবস্থান নেন।
এদিকে, প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসলে সভাস্থলে আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ছাড়াই শুরু হয় ওই বর্ধিত সভা। সভা শেষে ভাঙচুরের ঘটনার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে দায়ী করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী।
রাজশাহীর তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, স্টেজের ওপরে বসাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, একপর্যায়ে মারামারির পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায়। এ সময় দুই পক্ষের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙচুর করে। উভয়পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওসি আরও জানান, এখন সেখানে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।