সোয়া তিন বছর পর দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আবারো ৬ হাজার পয়েন্ট ছুঁইছুঁই অবস্থানে।
বৃহস্পতিবার লেনদেনের তিন ঘণ্টা শেষে দুপুর ১টায় সূচকটি ১০২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯৮৭ পয়েন্ট ছাড়াতে দেখা গেছে। গত ১৪ জানুয়ারি সূচকটি ৫ হাজার ৯০৯ পয়েন্ট উঠে পরে দরপতনের কারণে আর এগুতে পারেনি।
২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সূচকটি ৬ হাজার পয়েন্টের ওপর ছিল। পরদিন দরপতনে সূচকটি ওই মাইলফলক থেকে নিচে নামলে গত সোয়া তিন বছরে তা এর নিচেই অবস্থান করছিল।
শেয়ারবাজার পরিচালনায় তৎকালীন নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকিতে দুর্বলতা ও সুশাসনের অভাবে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ফাঁটল ধরলে ক্রমাগত ডুবছিল শেয়ারদর, তাতে সূচকও তলানিতে নামে।
গত বছরের মে মাসে শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের নেতৃত্বে নতুন কমিশন গঠনের পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করছে। এতে কাজও হচ্ছে। দর বাড়ছে অনেকে শেয়ারের। যার প্রতিফলন রয়েছে সূচকে। এতে লেনদেনেও এসেছে গতি।
তবে বর্তমানে শেয়ারদর ও সূচক বৃদ্ধিতে বাজেটে কর্পোরেট কর কমানোর গুঞ্জন বেশি প্রভাব রাখছে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। গুঞ্জন আছে, ব্যাংকসহ তালিকাভুক্ত প্রায় সব কোম্পানির করহার ২ শতাংশ কমানো হতে পারে। যদিও এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।
তবে নানামুখী গুঞ্জনকে কাজে লাগিয়ে কারসাজি চক্রও ফায়দা লুটছে। বাজেটে যে সুবিধা মিলবে, তার তুলনায় কোনো কোনো শেয়ারের দরকে অনেক বেশি বাড়িয়ে ফেলছে। কারসাজি নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও সক্রিয় নয়।
দুপুর ১টা পর্যন্ত দিনের প্রথম তিন ঘণ্টার লেনদেনে সেঞ্চুরি হলেও দরবৃদ্ধি পাওয়ার শেয়ারের তুলনায় দর হারানো শেয়ার সংখ্যার ব্যবধান কম। ১৬৫ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৩৩টি শেয়ার দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। এ সময়ে অপরিবর্তিত ছিল ৫৪টি শেয়ারের দর।
তারপরও সূচকের বড় উত্থানের কারণ ব্যাংক খাতের শেয়ারের দরবৃদ্ধি। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইএক্স সূচকের ১০০ পয়েন্ট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যাংক খাতের অবদানই ৬৫ পয়েন্টের বেশি।
দুপুর ১টার লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ খাতের তালিকাভুক্ত ৩১ শেয়ারের সবগুলোরই দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছে। গড়ে সব শেয়ারের বাজারদর বেড়েছে ৪.৩৬ শতাংশ।
এ সময়ে ৯ শতাংশের ওপর দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ২০ শেয়ার, যার ৯টিই ছিল ব্যাংক খাতের। বাকিগুলোর বেশিরভাগ বীমার এবং কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ার।
সূচক বৃদ্ধিতে খাত হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবদান বীমা খাতের। এ খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধি সূচকে যোগ করেছিল ১৩ পয়েন্ট।
গত মঙ্গলবার ডিএসইতে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। আজও সে পথে রয়েছে বাজার। দুপুর ১টা পর্যন্ত ডিএসইতে এক হাজার ৮০৭ কোটি টাকার বেশি শেয়ার কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।