অনলাইন ডেক্স ঃ
কালীগঞ্জে দিনের বেলা দুই স্ত্রীর ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে রাতে দ্বিতীয় স্ত্রী স্বামীর গোপনাঙ্গ কর্তন ও গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের রাথুরা গ্রামে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাথুরা গ্রামের মৃত সফুর উদ্দিনের পুত্র নাজমুল মৃধার (৩০) দুই স্ত্রী আছমা বেগম ও শ্যামলী এবং এক কন্যা হাফসা (৮) কে নিয়ে সংসার। নাজমুল প্রথম স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী তার পিতার বাড়ীতে বসবাস করেন। ঈদের আগের দিন নাজমুল প্রথম স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে ঈদুল আযহা উদযাপন করতে আসে। ২৩ জুলাই সকালে দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী তার পিতার বাড়ী হতে স্বামীর বাড়ীতে এসে সতীন আছমাকে অতকির্তভাবে ভাবে মারধর করে। দিবাগত রাত আনুমানিক ১০টায় পরিবারের সবাই রাতের খাবার খেয়ে নাজমুলের প্রথম স্ত্রী আছমা তার মায়ের সাথে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী স্বামীর সাথে ঘুমায়। রাত আনুমানিক ২টায় পরিবারের সদস্যগণ আর্তচিৎকার শুনে ঘরের বাহিরে এসে দেখে আছমা তার স্বামীকে ধরে বাড়ীতে নিয়ে আসছে। বাড়ীতে এসে শরীরের নি¤œাংশ রক্তে ভেজা নাজমুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে। প্রথম স্ত্রী আছমা কাপড় সরিয়ে দেখতে পায় স্বামীর গোপনাঙ্গ ও বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী কর্তন করা।
ভুক্তভোগী নাজমুল জানায়, রাতে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে শুয়ে পড়ার পর শ্যামলী দরজা খুলে একাধিকবার বসত ঘরের বাহিরে আসা যাওয়া করে। আমি তাকে ঘরের বাহিরে যাওয়া আসার কারণ জানতে চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। রাতে অসহ্য যন্ত্রণায় ঘুম ভেঙ্গে গেলে উঠে দেখতে পাই আমার গোপনাঙ্গ রক্তাক্ত এবং শ্যামলীর বাম হাতে একটি নতুন রক্তাক্ত বেøড ও ডান হাতে একটি ধারালো বটি। এসময় আমি শ্যামলীকে ঝাপটে ধরার চেষ্টা করলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বটি দিয়ে গলায় কোপ মারে। আমি আত্মরক্ষার্থে বাম হাত দিয়ে উক্ত বটির কোপ প্রতিহতের চেষ্টা করলে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী কেটে রক্তাক্ত জখম হয়। শ্যামলী আমাকে রক্তাক্ত জখম করে চৌকি থেকে নেমে ঘরের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমিও রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত দেহ নিয়ে তার পিছন পিছন জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে তাকে ধরার চেষ্টা করি। কিন্তু শ্যামলী দৌড়ে আমাদের বাড়ীর দক্ষিণ দিকে পালিয়ে যায়। পরে প্রচুর পরিমানে রক্ত হারিয়ে আমি মাটিতে পড়ে গেলে প্রথম স্ত্রী আছমা আমাকে উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে আসে।
ভুক্তভোগী নাজমুলকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার গোপনাঙ্গ ও বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলীতে সেলাই করে। সকালে নাজমুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
এ বিষয়ে নাজমুলের বড় বোন বিলকিস বেগম বাদী হয়ে ২৪/০৭/২১ তারিখ রাতে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক রাতেই এজাহারটি উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ জাকির হোসেন এর নিকট হস্তান্তর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।
উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ জাকির হোসেন বলেন, এজাহারটি পেয়েছি। বিবাদী বাড়িতে আছে কিনা খোঁজ খবর করছি। বিবাদীকে গ্রেফতার করে এজাহারটি এফআইআর ভুক্ত করার জন্য ওসি স্যার নির্দেশ প্রদান করেছেন।