নূর মোহাম্মদ
উপজেলা প্রতিনিধি,কালিগঞ্জ।
সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে রামনগর গোলাপ সংঘের উদ্যোগে মঙ্গলবার(৫ অক্টোবর) বাদ আসর হইতে রামনগর শেখ পাড়া জামে মসজিদ প্রঙ্গনে চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ প্রায় সহস্র গ্রন্থের রচয়িতা আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলভী (রহমাতুল্লাহে আলাইহি )এর ১০৩ তম ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে পবিত্র ওরস মোবারক অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত ওরস মোবারক অনুষ্ঠানে জামেয়া কাদেরিয়া তাহেরিয়া আলিয়া মাদ্রাসার সুপার মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ শাহিনুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসাবে আলোচনা করেন – সারা বাংলার আলোড়ন সৃষ্টিকারী বক্তা, আলহাজ্ব মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ নাজমুস সাহাদাত ফয়েজী, মুদাররিস- কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসা, ঢাকা।
বিশেষ বক্তা হিসাবে আলোচনা করেন, আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম আজিজী, সাতক্ষীরা।
এছাড়াও পবিত্র ওরস মোবারকে দেশ বরেণ্য সুন্নী উলামায়ে কেরামগণ তকরির পেশ করেছেন।
উক্ত ওরস মোবারক অনুষ্ঠানে দেশ বরেণ্য বক্তদের মাধ্যমে জানা যায়,চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ প্রায় দেড় সহস্র গ্রন্থের রচয়িতা আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলভী (রহমাতুল্লাহে আলাইহি )
আলা হযরত (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) ৬৮ বছরের জিন্দেগীতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ৫৫টি শাখা প্রশাখার উপর প্রায় দেড় হাজার কিতাব রচনার মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে আল্লাহ ও রাসুল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আদর্শে উজ্জীবিত করেছিলেন।
আলা হযরতের লেখা উল্লেখ যোগ্য কিতাব কানজুল ঈমান (কুরআনের অনুবাদ)
মূল নিবন্ধ: কানজুল ঈমান
কানজুল ঈমান (উর্দু এবং আরবি: ﮐﻨﺰﺍﻻﯾﻤﺎﻥ ) ১৯১০ সালে পবিত্র কোরআন শরিফের উর্দু ভাষায় অনূদিত গ্রন্থ। এটি হানাফী মাযহাবের আইনসমুহকে সমর্থন করে। এটি ভারত উপমহাদেশের সর্বাধিক পঠিত পবিত্র কোরআনের অনুবাদ গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আলা হযরত সম্পর্কে বিখ্যাত ব্যক্তিদের উক্তি..
১) দার্শনিক আল্লামা ইকবাল বলেন- হিন্দুস্তানে শেষ যুগে আলা হযরতের মত দক্ষ, মেধাবী ফক্বীহ জন্ম গ্রহন করেন নি। জ্ঞানের দিক দিয়ে তিনি এ যুগের ইমাম আবু হানিফা। ইমাম আহমদ রেজা খাঁন কীরূপ উচ্চ পর্যায়ের ইজতেহাদী যোগ্যতা সম্পন্ন ছিলেন এবং যুগশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞ পন্ডিত ছিলেন, তার ফতোয়া সমুহ অধ্যায়ন করলে তৎসম্বন্ধে ধারণা লাভ করা যায়।
২)আল্লামা হেদায়াতুল্লাহ সিন্দী মোহাজির মাদানী বলেন-তিনি (আ’লা হযরত) একজন প্রতিভাধর, নেতৃত্ব দানকারী আলেম, তাঁর সময়কার প্রখ্যাত আইনবিদ এবং নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহর দৃঢ় হেফাজতকারী, বর্তমান শতাব্দীর পুণরুজ্জীবন দানকারী, যিনি “দ্বীনে ইসলাম” এর জন্য সর্বশক্তি দ্বারা আত্মনিয়োগ করেছিলেন, যাতে শরীয়তের হেফাজত করা যায়। তাঁর সাথে দ্বিমত পোষণকারীদের ব্যঙ্গ বিদ্রুপের প্রতি তিনি তোয়াক্কা করেননি। তিনি দুনিয়াবী জীবনের মোহ সমূহের পিছু ধাওয়া করেননি বরং রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রশংসাসুচক বাক্য রচনা করতেই বেশি পছন্দ করেছিলেন। হুজুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রেমের ভাবোন্নাত্বতায় তিনি সর্বদা মশগুল ছিলেন বলেই প্রতীয়মান হয়। সাহিত্যিক সৌন্দর্যমন্ডিত ও প্রেম ভক্তিতে ভরপুর তাঁর “নাতিয়া পদ্যের” মূল্য যাচাই করা একেবারেই অসম্ভব। দুনিয়া এবং আখেরাতে তাঁর প্রাপ্ত-পুরষ্কারও ধারণার অতীত।
৩) আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আলাউয়ী বলেন-“একটি প্রাচীন প্রবাদ আছে যে, বিদ্যা, প্রতিভা ও কাব্যগুণ কোন ব্যক্তির মাঝে একসাথে সমন্বিত হয় না। কিন্তু আহমদ রেযা খাঁন ছিলেন এর ব্যতিক্রম।
আলা হযরত এমন একজন মহান ব্যক্তি ছিলেন যে তাকে নিয়ে ” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইউনিভার্সিটি” গুলোতে গবেষনা করা হচ্ছে।
পরিশেষে বলেন, আ’লা হযরত সম্পর্কে বলে বা লিখে শেষ করা সম্ভব নয়, তাই মহান রব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে তাহার মডেল জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন। আমিন