প্রতিমা দাস, পবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা এবং বাংলার সংস্কৃতি। কিন্তু নানাবিধ কারণে বাংলাদেশের এই অমূল্য সম্পদ হারিয়ে যাচ্ছে। এজন্যই নদী নিয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশেই গড়ে তোলা হয়েছে এশিয়ার সর্বপ্রথম পানি জাদুঘর।
নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবনের ইতিহাস, বাংলার সংস্কৃতি, হারিয়ে যাওয়া ও বর্তমান নদীর ইতিহাস এবং নদী সংরক্ষণকে ভিত্তি করে ২০১৪ সালে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পাখিমারাতে গড়ে তোলা হয়েছে এই জাদুঘরটি। এই জাদুঘরটি নির্মানের উদ্যোক্তা বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সংস্থা “একশন এইড, বাংলাদেশ।” ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড.ইমতিয়াজ আহমেদ আনুষ্ঠানিক ভাবে এ জাদুঘরটির উদ্বোধন করেন। এটি বিশ্বের অষ্টম এবং দক্ষিণ এশিয়ার সর্বপ্রথম পানি জাদুঘর।
জাদুঘরটির সামনেই রয়েছে প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্য “নৌকা”। নৌকাটি বালিতে অর্ধডুবন্ত এবং এর বুকে বিঁধে আছে দুটি গজাল লোহা। যা দ্বারা নদী ও নদীমাতৃক বাংলাদেশকে খুনের প্রতীকী চিত্রায়ণ করা হয়েছে। জাদুঘরটিতে অসংখ্য নদীর ইতিহাসের পাশাপাশি পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, আন্দারমানিকসহ বাংলাদেশের ১০ টি এবং বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক অভিন্ন ৫৭ টি নদীর পানির নমুনা রয়েছে। এছাড়াও গ্রাম বাংলার মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ, কাঁসা এবং মাটির তৈরি তৈজসপত্র, পল্লীশিল্পের বিভিন্ন উপাদান রয়েছে জাদুঘরটিতে।
মঙ্গলবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই পানি জাদুঘরটি। নতুন প্রজন্মের কাছে হারিয়ে যাওয়া নদী এবং বর্তমান নদীর ইতিহাস ও গুরুত্ব তুলে ধরার এক অনবদ্য দৃষ্টান্ত এই পানি জাদুঘর।
সর্বোপরি, নদী সংরক্ষণে আমাদের সকলকে অধিকতর সচেতন হতে হবে। নদী সম্পদ সংরক্ষিত থাকলে, সুরক্ষিত থাকবে বাংলাদেশ।