1. admin@kholanewsbd24.com : admin :
ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ মন্ত্রণালয়ের - খোলা নিউজ বিডি ২৪
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ০৭:৫৫ অপরাহ্ন
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ০৭:৫৫ অপরাহ্ন

ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ মন্ত্রণালয়ের

প্রশাসন
  • সময় : বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১
  • ২০১ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক :
অভিনব প্রতারণার ফাঁদ তথাকথিত ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ডটকমের বিরুদ্ধে মামলা করতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৃথক চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া ৩৩৮ কোটি টাকা আত্মসাত কিংবা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা করে আলোচিত-সমালোচিত ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালি ডটকমের বিরুদ্ধে মামলা করতে এই চিঠি দিয়েছে।

২০১৮ সালে এই অভিনব প্রতারণের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করে ইভ্যালি ডটকম। কম দামে পণ্য দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম ২১৩.৯৪ কোটি টাকা ও মার্চেন্টের কাছে থেকে ১৮৯.৮৫ কোটি টাকার পণ্য না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ সময়ে কম দামের কিছু গ্রাহকদের সরবারহ করলেও গ্রাহকদের কাছে থেকে অভিযোগ আসতে থাকে যারা বড় অংকের টাকা পাঠিয়েছে তাদের টাকার পণ্য বা টাকা ফেরত দিচ্ছে না। মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এ সময় নানা রকম চটকদার ও লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এর পরিপ্রক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিষয়টি পরিদর্শনের অনুরোধ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পরিদর্শনে নেমে বড় ধরনের অনিয়মের সন্ধান পায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক উল্লেখ করে, ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭.১৮ কোটি টাকা। গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ ২১৩.৯৪ কোটি টাকা এবং মার্চেন্টদের কাছ থেকে ১৮৯.৮৫ কোটি টাকার মালামাল বাকিতে গ্রহণের পর স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৩.৮০ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা থাকলেও সে সম্পদ নেই। আছে মাত্র ৬৫.১৭ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ইভ্যালির ওপর পরিচালিত বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে আর্থিক অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। গ্রাহক ও মার্চেন্টদের বিপুল পরিমাণ অর্থের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ যাতে আত্মসাত বা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও প্রতিযোগিতা কমিশনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোক্তা ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে ইভ্যালি যে টাকা অগ্রিম নিয়েছে, তা পরিশোধ করতে হবে। মাত্র তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা অবশ্যই গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করব। শুধু ইভ্যালিই নয়, অন্য কোনো কোম্পানিও এ ধরনের কর্মকা- করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ৪ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুদক ভোক্তা অধিকার পাঠানো চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইভ্যালি ডট কমের চলতি সম্পদ দিয়ে মাত্র ১৬.১৪% গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে বা অর্থ ফেরত দিতে পারবে। বাকি গ্রাহক এবং মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধ করা ওই কোম্পানির পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে নেওয়া ৩৩৮.৬২ কোটি টাকার কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যা আত্মসাত কিংবা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে একই চিঠি দেওয়া হয় ভোক্তা অধিকার ও প্রতিযোগিতা কমিশনকে।

ইভ্যালি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের পর থেকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রশ্ন ওঠে ইভ্যালির ব্যবসার ধরণ নিয়ে। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মামলা করতে চিঠি পাঠানোর পর বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পণ্য বা টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চত হয়ে পড়লো। ডেসটিনি, যুবক বা ইউনি পে’র মতো পরিণতি হতে যাচ্ছে।

আসকার আলী নামে একজন গ্রাহকের বক্তব্য, মন ভোলানো বিজ্ঞাপন দেখে আমরা তো বিশ্বাসই করতে পারিনি এত বড় প্রতারণার শিকার হতে যাচ্ছি। ছোট্ট ছোট্ট পণ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রাহকদের সরবারহ দেওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন নতুন মানুষকে আকর্ষণ করেছে। চকদার, মনভোলানো বিজ্ঞাপন দেখার পর বিষয়টি মাথাতেই আসেনি এক লাখ ৫০ হাজার টাকা পণ্য যখন হাজার হাজার মানুষ এক লাখ টাকায় পাওয়ার জন্য অগ্রিম টাকা দেবে তখন ইভ্যালি এই পণ্য কোথায় থেকে দেবে?

ড. রাশেদুল ইসলাম নামে এক তরুণ ডাক্তার দুটি পণ্য কেনার মে মাসে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়েছেন। আড়াই সময় দেওয়া আছে। আড়াই মাসের মধ্যে পণ্য না দিতে পারলে বিকল্পের কথা বলা আছে। সে হিসাবে আমার পণ্য পাওয়ার সময় এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন ও গতকাল ইভ্যালির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির পর মনে হচ্ছে পুরোটাই অনিশ্চিত হয়ে গেলো। বিদেশে টাকা পাচার পাচার বা নিজেই পালিয়ে যাওয়ার আগে আইনি ব্যবস্থা নিলে নিশ্চই টাকা ফেরত পাবে এমন আশা এ সব গ্রাহকের। বিষয়টি নিয়ে ফোনে কথাা বলার চেষ্টা করলে ফোন রিভিস করেননি ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ রাসেল। প্রথমে ফোন রিসিভ করেননি পরে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা