সরকারি বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় ১৪ দিন পর পুরোদমে চালু হলো দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল। এতদিন সীমিতভাবে কেবল প্রবাসী ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্যই ফ্লাইট চালু ছিল। সরকার এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রজ্ঞাপনের পর গতকাল থেকে পুরোদমে চালু হয়েছে ফ্লাইট। এদিকে যাত্রীদের জন্য খুলেছে সব নৌরুট, খুলেছে সদরঘাটের প্রবেশদ্বার। আর শিমুলিয়ায় যুক্ত হয়েছে কদম ও কুঞ্জলতা নামে দুটো ফেরি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ঢাকা থেকে সৈয়দপুরে ৩টি, যশোরে ২টি, রাজশাহীতে ১টি, চট্টগ্রামে ২টি, সিলেটে ২টি, কক্সবাজারে ১টি এবং বরিশালে ১টি ফ্লাইট গেছে। এছাড়াও নভোএয়ার চট্টগ্রামে ২টি, কক্সবাজারে ১টি, সৈয়দপুরে ৩টি, বরিশালে ২টি, রাজশাহীতে ১টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও চার থেকে পাঁচটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। বেবিচকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ফ্লাইটগুলোতে উঠার আগে এয়ারক্রাফটগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। মাস্ক পরে যাত্রীদের তোলা হচ্ছে ফ্লাইটে।
এর আগে ১ জুলাই থেকে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বেবিচক। তবে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীদের বিক্ষোভের মুখে তাদের জন্য সীমিত পরিসরে ২ জুলাই থেকে আবারও ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেওয়া হয়।
১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সরকারি বিধিনিষেধ শিথিল করায় আবারও ফ্লাইট চালু হয়েছে। এই সময়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিদিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ৫টি, কক্সবাজারে ২টি, সৈয়দপুরে ৭টি, যশোরে ৬টি, সিলেট-বরিশাল ও রাজশাহীতে ৪টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
নভোএয়ার চট্টগ্রামে ৬টি, সৈয়দপুরে ৬টি, যশোরে ৬টি, বরিশালে ৬টি, সিলেটে ৩টি, রাজশাহীতে ৩টি ও কক্সবাজারে ২টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ পৃষ্ঠা ১১ কলাম ৪
অবশেষে স্বাভাবিক এয়ারলাইন্স চট্টগ্রামে ৩টি, সৈয়দপুরে ৩টি, কক্সবাজারে ২টি, যশোরে ২টি, সিলেটে ২টি, রাজশাহীতে ১টি ও বরিশালে ১টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল শুরু
লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করায় তিন সপ্তাহের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল ফের শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে এমভি ইমাম হাসান রাজধানী ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে নৌযান চলছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবহন পরিদর্শক দিনেশ কুমার সাহা বলেন, এতদিন পর লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও উপচেপড়া ভিড় নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চগুলো ছাড়া হচ্ছে। এমভি টিপু লঞ্চের মহাব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করছে।
শিমুলিয়ায় যুক্ত ফেরি কদম ও কুঞ্জলতা
উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে যুক্ত হয়েছে আরও দুটি ফেরি ‘কদম’ ও কুঞ্জলতা। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ শিমুলিয়া ও মাদারীপুর বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭টি। এগুলোর মধ্যে চারটি রো রো, ছয়টি ডাম্ব, ছয়টি মিডিয়াম ও একটি ছোট ফেরি।
গতকাল বিকালে এ ফেরি দুটি উদ্বোধন করে প্রধান অতিথি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে এই দুটি মিডিয়াম ফেরি নির্মাণ শুরু হয়। এগুলো নির্মাণ করেন হাইস্পিড শিপবিল্ডিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। প্রত্যেকটির ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা। প্রতিটি ফেরির দৈর্ঘ্য ৪২.৭০ মিটার ও প্রস্থ ১২.২০ মিটার। এর সার্ভিস স্পিড ঘণ্টায় ১০ নটিকেল মাইল। এই দুটি মিডিয়াম ফেরির এক একটিতে ১২টি ২৫ টনের ট্রাক ও ১০০ যাত্রী বহন করতে পারবে।